এরপর তিনি হুঙ্কার দিয়ে বলেন, "সত্য প্রতিষ্ঠা করতেই আমাকে আবার মাঠে নামতে হবে। এবার আমি 'রাজনৈতিক জম্বি' হিসেবে ইতিহাস তৈরি করব।"
নাবিল. নাহিদ. কট্টর হিন্দু বিক্রম. নবীন ও ডেভিড. গদি মিডিয়া ইন
কবর থেকে ফিরে এলেন মুজিব খুনী বনবাস প্রাপ্ত মেজর ডালিম। শেখ মুজিবের খুনের দায়ে এতদিন গর্তে লুকিয়ে থেকে মনের কথা বনের ছাগু সম্প্রতি হিন্দুধর্ম গ্রহণ করা ইন্দ্রলোচন শর্মার এক ইউটিউব লাইভে তাকে কল্লা জাগাতে দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
বিশেষ লাইভে যুক্ত হয়ে সনাতনধর্ম গ্রহণ করলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর ডালিম!
এত বছর কই ছিলেন?
মেজর ডালিম: এলেই তো ঝুলিয়ে দিতে। তারচেয়ে ভালো গর্তে লুকিয়ে তোমাদের মজা দেখেছি৷
মুজিবকে কেন হত্যা করলেন?
মেজর ডালিম: একটা ইন্ডিয়ান কীট হত্যা করেছি, কেন করেছি তার জবাব চাওয়ার মতো হাস্যকর কিছু নেই৷
সাংবাদিক: মেজর ডালিম, আপনি আমাদের ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়ের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিলেন। আপনার এই যাত্রা কেমন ছিল?
মেজর ডালিম: (গম্ভীর হয়ে) ইতিহাস অনেক সময় ভিন্ন ভিন্ন চেহারায় ধরা দেয়। আমাদের যাত্রা ছিল দেশপ্রেম থেকে শুরু হয়ে ভুল বোঝাবুঝি আর ষড়যন্ত্রে জড়িয়ে পড়ার একটি গল্প। আমি যা করেছি, তা নিজের দেশের জন্য ভেবেই করেছি।
সাংবাদিক: ১৫ আগস্টের ঘটনার কথা বলুন। কেন এমন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছালেন?
মেজর ডালিম: সেই সময় দেশের পরিস্থিতি খুবই অস্থির ছিল। সাধারণ মানুষ চরম হতাশ ছিল, দুর্নীতি আর আত্মস্বার্থ দেশটাকে গ্রাস করছিল। আমরা ভেবেছিলাম, দেশের ভবিষ্যৎ রক্ষা করতে হলে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বঙ্গবন্ধুকে আমরা শ্রদ্ধা করতাম, কিন্তু তার সময়ের কিছু মানুষ দেশকে ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছিল। আমরা পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলাম।
সাংবাদিক: কিন্তু সেই পরিবর্তন অনেকের কাছে ‘ধ্বংস’ বলে মনে হয়।
মেজর ডালিম: হ্যাঁ, আমি একমত। কোনো কিছু পরিকল্পিত না হলে তা সঠিক ফল দেয় না। আমরা সৈনিক ছিলাম, রাজনীতিবিদ নই। আমরা নিজেরাই হয়তো বুঝতে পারিনি আমাদের কাজের পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে।
সাংবাদিক: আপনি কি মনে করেন, আপনারা যা করেছেন তা ভুল ছিল?
মেজর ডালিম: (চুপ থেকে) দেখো, আমরা যা করেছি, তা সময়ের প্রয়োজন মনে করে করেছি। কিন্তু মানুষ তো ভুল করেই। হ্যাঁ, আজ যদি আমি সেই মুহূর্তে ফিরে যেতে পারতাম, হয়তো কিছু সিদ্ধান্ত ভিন্নভাবে নিতাম।
সাংবাদিক: তাহলে কি আপনার অনুশোচনা আছে?
মেজর ডালিম: (গম্ভীর স্বরে) একজন সৈনিক হিসেবে নয়, একজন মানুষ হিসেবে বলছি—আমাদের কর্মকাণ্ডের কারণে দেশ যে ধাক্কাটা খেয়েছে, তা হয়তো আর পূরণ হবে না। এটা অবশ্যই আমার এবং আমাদের সবার জন্য অনুশোচনার বিষয়।
![]() |
ইয়ং মেজর ডালিম |
সাংবাদিক: এখন যারা আপনাকে সমর্থন করে, তাদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন?
মেজর ডালিম: যারা আমাকে সমর্থন করেন, তাদের জন্য আমার বার্তা হলো—সব সময় দেশকে ভালোবেসো। দেশ নিয়ে ভাবো। আমি যা করেছি, তা হয়তো ভুলে ভরা, কিন্তু আমার উদ্দেশ্য কখনোই দেশের ক্ষতি করা ছিল না।
সাংবাদিক: ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কোনো বার্তা?
মেজর ডালিম: হ্যাঁ, আমি তাদের বলতে চাই—শিক্ষা গ্রহণ করো। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নাও। একে অন্যকে ভালোবাসো, কারণ বিভাজন আর দ্বন্দ্ব আমাদের পেছনের দিকে নিয়ে যায়। একত্রে কাজ করলেই আমাদের বাংলাদেশ সুন্দর ভবিষ্যৎ পাবে।
মেজর ডালিম: (একটু হাসি দিয়ে) ইতিহাস কখনো সহজ সরল নয়। ১৯৭৫ সালের বাংলাদেশ ছিল অস্থিরতার কেন্দ্রস্থল। দেশ তখন স্বাধীনতার পর একটি কঠিন সময় পার করছিল—দুর্নীতি, খাদ্য সংকট, আর মানুষের ক্ষোভ তীব্র হয়ে উঠছিল। আমরা দেখলাম, আমাদের স্বাধীনতার যে স্বপ্ন, তা হয়তো হারিয়ে যাচ্ছে।
সাংবাদিক: তখনকার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে কী বলবেন?
মেজর ডালিম: রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট খুব জটিল ছিল। বঙ্গবন্ধু ছিলেন মহান নেতা, কিন্তু তার চারপাশে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই ব্যক্তিস্বার্থ আর ক্ষমতার লড়াইয়ে লিপ্ত ছিলেন। আমরা, তরুণ সৈনিকেরা, সেটা খুব কাছ থেকে দেখেছি। বঙ্গবন্ধুর ‘বাকশাল’ অনেকের কাছে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি ধাক্কা হিসেবে দেখা দিয়েছিল। সাধারণ মানুষের মধ্যে একধরনের হতাশা তৈরি হয়েছিল।
সাংবাদিক: আপনি বলছেন, তখনকার সরকার ব্যর্থ হচ্ছিল?
মেজর ডালিম: দেখুন, আমি সব কিছু একপেশে বলতে চাই না। বঙ্গবন্ধুর উদ্দেশ্য মহান ছিল, কিন্তু তাঁকে সঠিকভাবে সাহায্য করার মতো লোক ছিলেন না। তাঁর চারপাশের মানুষ তাঁকে ভুল পথে পরিচালিত করছিলেন। তখন আমরা ভেবেছিলাম, দেশের জন্য আমাদের কিছু করতে হবে।
সাংবাদিক: সেই ‘কিছু’ কি ১৫ আগস্টের মতো একটি ভয়াবহ পদক্ষেপ ছিল?
মেজর ডালিম: (চুপ থেকে) আমরা মনে করেছিলাম, এটি দেশের জন্য প্রয়োজনীয়। হয়তো আমাদের চিন্তা সঠিক ছিল না। তবে বিশ্বাস করুন, আমাদের লক্ষ্য ছিল দেশকে বাঁচানো, দেশের মানুষকে সঠিক পথে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু সেই পদক্ষেপ কতটা সঠিক ছিল, তা সময়ই প্রমাণ করেছে।
সাংবাদিক: বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে কোনো আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল কি?
![]() |
ইয়ং মেজর ডালিম তার স্ত্রীর সাথে |
মেজর ডালিম: (গম্ভীরভাবে) ষড়যন্ত্র তো সব সময় থাকে। কোনো বড় পরিবর্তন সহজে ঘটে না। দেশি-বিদেশি শক্তি তখন অনেক কিছুতেই ভূমিকা রেখেছে। কিন্তু আমি বলতে চাই, আমাদের কাজ একান্তই দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি আর আমাদের ভুল ধারণার ফল।
সাংবাদিক: আপনি তো বলতে পারেন, আপনাদের পরিকল্পনা কেন ব্যর্থ হলো?
মেজর ডালিম: (হালকা হাসি) কারণ আমরা সৈনিক ছিলাম, রাজনীতিবিদ নই। আমরা ভেবেছিলাম, একটি নেতৃত্বহীন রাষ্ট্রকে নতুন করে গড়ে তুলব। কিন্তু রাজনীতি এমন একটা খেলা, যেখানে অভিজ্ঞতা ছাড়া আপনি কিছু করতে পারবেন না।
সাংবাদিক: বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব হয়নি কেন?
মেজর ডালিম: আমরা যা করেছি, তা নিয়ে দেশের অনেক মানুষই দ্বিধান্বিত ছিল। আমাদের পরিকল্পনা ছিল আদর্শগত, কিন্তু বাস্তবতা ছিল ভিন্ন। সাধারণ মানুষ ধীরে ধীরে বুঝতে পারল, আমরা সমস্যার সমাধান করতে পারব না।
সাংবাদিক: আপনি কি মনে করেন, ইতিহাস আপনাকে ভুলভাবে বিচার করেছে?
মেজর ডালিম: (দীর্ঘশ্বাস ফেলে) ইতিহাস সব সময় একপেশে নয়, কিন্তু তা প্রায়ই বিজয়ীদের দৃষ্টিতে লেখা হয়। আমি জানি, অনেকেই আমাকে ‘খলনায়ক’ ভাবে। কিন্তু যারা আমাকে চেনে, তারা জানে যে, আমি সব সময় দেশকে ভালোবেসেছি।
সাংবাদিক: অনেকে আপনাকে এখনো সমর্থন করে। তাদের জন্য কিছু বলতে চান?
মেজর ডালিম: আমি তাদের ধন্যবাদ জানাই। আমি জানি, তারা আমার কর্মকাণ্ডের চেয়েও আমার দেশপ্রেমের প্রতি আস্থা রাখে। আমি তাদের বলতে চাই, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে আগাতে হবে। আমরা যা ভুল করেছি, তোমরা যেন তা পুনরাবৃত্তি না করো।
সাংবাদিক: তাহলে কি আপনার মনে হয়, আপনার কাজ থেকে কিছু শিক্ষা নেওয়া যেতে পারে?
মেজর ডালিম: অবশ্যই। আমার কাজের সঠিক-ভুল নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে, কিন্তু এক জিনিস স্পষ্ট—দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে ঐক্য আর দূরদর্শিতা প্রয়োজন। বিভাজন নয়, একতাই দেশের উন্নতির মূল চাবিকাঠি।
শেখ কামাল কি করেছিলো?
মেজর ডালিম: ঐ হালা তো মদখোর ছিলো৷ আমার বউরে তুলে নিয়া আমারেই আবার চাকরিচ্যুত করেছে৷
মুজিব কে কয়টা গুলি করেছেন?
মেজর ডালিম: কয়টা করেছি তা তো মনে নাই, তবে যতক্ষণ না ঝাঁঝরা হয়েছে ততক্ষণে রাইফেল ধরে রেখেছি৷ হাসিনার কপাল ভালো ছিলো, অয় তখন বাংলাদেশে ছিলো না৷
সাংবাদিক: ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আপনি কী বার্তা দেবেন?
মেজর ডালিম: তাদের জন্য আমার বার্তা হলো, দেশকে নিজের পরিবারের মতো ভালোবাসো। রাজনীতি হোক বা কোনো আন্দোলন, সব সময় মানুষের কল্যাণকে অগ্রাধিকার দাও। এবং হ্যাঁ, ইতিহাস থেকে শিক্ষা নাও। কারণ, আমাদের ভুল যেন তোমাদের ভুল না হয়।
সাংবাদিক: বঙ্গবন্ধু হত্যার পরপরই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়েছিল, তা নিয়ে আপনার কী মতামত?
মেজর ডালিম: সেটা খুবই প্রত্যাশিত ছিল। এমন একটা বড় পরিবর্তন হলে, বিশেষ করে এমন একটি হত্যাকাণ্ডের পর, বিশৃঙ্খলা তো হবেই। আমাদের আসলে খুব কম সময় ছিল পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য। তখন সবকিছু এত দ্রুত ঘটছিল যে, অনেক সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিকভাবে নিতে হয়েছিল।
সাংবাদিক: আপনাদের সেই সময়ের নেতৃত্বে ব্যর্থতার কথা কি আপনি স্বীকার করবেন?
মেজর ডালিম: ব্যর্থতা তো ছিলই। আমরা সেনা সদস্য ছিলাম, রাজনীতি আমাদের কাজ ছিল না। আমরা জানতাম কীভাবে লড়াই করতে হয়, কিন্তু জানতাম না কীভাবে একটি রাষ্ট্রকে পরিচালনা করতে হয়। এটি আমাদের দুর্বলতা ছিল।
সাংবাদিক: আপনি কি মনে করেন, আপনাদের পরিকল্পনা বেশি বড় লক্ষ্য স্থির করেছিল?
মেজর ডালিম: আমি সেটা বলব না। আমাদের লক্ষ্য ছিল দেশের অস্থিরতা দূর করা এবং একটি স্থিতিশীল সরকার গঠন করা। কিন্তু পরিকল্পনা ও বাস্তবতার মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে। আমাদের পরিকল্পনার অনেক জায়গায় ঘাটতি ছিল।
সাংবাদিক: আপনার কি মনে হয়, বঙ্গবন্ধুর পরিবারকে হত্যার প্রয়োজন ছিল?
মেজর ডালিম: (কিছুক্ষণ চুপ থেকে) এটি একটি কঠিন প্রশ্ন। আমি এটুকু বলতে পারি, আমরা যা করেছি তা সময়ের চাপ এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় করেছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে কারো বিরুদ্ধে কোনো বিদ্বেষ পোষণ করিনি।
সাংবাদিক: আপনি নিজে কি কোনো মুহূর্তে এর বিপক্ষে কথা বলেছিলেন?
মেজর ডালিম: সৈনিক জীবনে আপনি আদেশ পালন করেন। কিন্তু সৈনিকের জীবনেও মাঝে মাঝে দ্বিধার মুহূর্ত আসে। আমি বলব, আমার মনে অনেক প্রশ্ন ছিল, কিন্তু তখন সেই প্রশ্ন তোলার সুযোগ ছিল না।
সাংবাদিক: ১৫ আগস্টের ঘটনার পর আপনি কি কখনো ভেবেছিলেন যে, এটি দেশের জন্য ভুল ছিল?
মেজর ডালিম: (গভীরভাবে) সময়ের সাথে সাথে বুঝেছি, আমাদের উদ্দেশ্য সৎ ছিল, কিন্তু পদক্ষেপগুলো ছিল ত্রুটিপূর্ণ। একটি দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করার জন্য শুধু শক্তি আর সাহস যথেষ্ট নয়, বুদ্ধি এবং ধৈর্যও দরকার।
সাংবাদিক: আপনার বিরুদ্ধে অনেক সমালোচনা আছে যে, আপনি দেশের স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিস্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছেন। আপনি কী বলবেন?
মেজর ডালিম: এটি একেবারেই মিথ্যা। আমি সব সময় দেশের কথা ভেবেছি। যদি ব্যক্তিস্বার্থ থাকত, তাহলে আমি অন্য পথ বেছে নিতাম। আমাদের দলের মধ্যে কিছু বিভ্রান্তি এবং ভুল বোঝাবুঝি থাকলেও, আমার উদ্দেশ্য সব সময় দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ ছিল।
সাংবাদিক: বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বিদেশি শক্তিগুলোর ভূমিকাকে আপনি কীভাবে দেখেন?
মেজর ডালিম: বিদেশি শক্তিগুলোর ভূমিকাকে অস্বীকার করার উপায় নেই। কিন্তু আমরা কেবল নিজের দেশের বাস্তব পরিস্থিতি বিবেচনা করেই কাজ করেছি। কেউ আমাদের সরাসরি প্রভাবিত করেনি, তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি সব সময়ই এমন ঘটনার পেছনে থেকে যায়।
সাংবাদিক: আপনার কি মনে হয়, আপনি এখনো ভুল বোঝা হয়?
মেজর ডালিম: (হালকা হাসি) ইতিহাস সব সময় বিজয়ীর দৃষ্টিভঙ্গি থেকে লেখা হয়। আমাদের ভুল বোঝা হবে, এটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমার প্রার্থনা, একদিন সবাই আমাদের উদ্দেশ্যটুকু অন্তত বুঝবে।
সাংবাদিক: ভবিষ্যতে যদি আপনাকে এই ঘটনার একটি অংশ পুনরায় করার সুযোগ দেওয়া হয়, আপনি কী করবেন?
মেজর ডালিম: আমি হয়তো আরও ভালোভাবে পরিকল্পনা করতাম। ইতিহাসের ভুল শুধরে নেওয়ার সুযোগ নেই, তবে যদি এমন সুযোগ থাকত, আমি হয়তো আরও স্থিরতা ও সতর্কতার সাথে কাজ করতাম।
সাংবাদিক: আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় আফসোস কী?
মেজর ডালিম: (চুপ থেকে) আমার সবচেয়ে বড় আফসোস হলো, দেশের জন্য ভালো কিছু করতে গিয়ে হয়তো আরও বড় ক্ষতি করে ফেলেছি। এটা আমাকে সারাজীবন তাড়া করে বেড়াবে।
সাংবাদিক: আপনি কি নিজেকে একজন দেশপ্রেমিক মনে করেন?
মেজর ডালিম: (দৃঢ়ভাবে) আমি জানি, আমার কাজ নিয়ে বিতর্ক আছে। কিন্তু আমি সব সময় দেশপ্রেমিক ছিলাম এবং থাকব। আমার ভালোবাসা সব সময় আমার মাতৃভূমির জন্য।
সাংবাদিক: মেজর ডালিম, আপনি তো একজন সামরিক কর্মকর্তা ছিলেন। আপনার কি মনে হয়, রাজনীতি আপনাদের জন্য সঠিক জায়গা ছিল?
মেজর ডালিম: (হেসে) রাজনীতি আমাদের জন্য ঠিক সেরকম ছিল, যেমন মাছের জন্য মরুভূমি! আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু রাজনীতির গভীর জল আমাদের ডুবিয়ে দিয়েছে।
সাংবাদিক: বঙ্গবন্ধু হত্যার রাতে আপনি কি ঠিকঠাক ঘুমাতে পেরেছিলেন?
মেজর ডালিম: (মৃদু হেসে) ঘুমানোর সময় কে পেয়েছে? সেদিন পুরো রাত শুধু চিন্তা আর উত্তেজনায় কাটিয়েছি। ঘুমের কথা তো দূরের কথা, মাথায় হাজারো প্রশ্ন ঘুরছিল।
সাংবাদিক: আপনার কি মনে হয়, আপনি যদি সিনেমার চরিত্র হতেন, তাহলে মানুষ আপনাকে ভিলেন মনে করত?
মেজর ডালিম: (হাসি দিয়ে) ভিলেন? হয়তো, কিন্তু ডার্ক ভিলেনের মতো, যাকে কেউ বুঝতে পারে না! তবে আমি বলব, গল্পটা পুরো শোনার পর মানুষ হয়তো ভাবত, আমি ভিলেন নই, বরং এক ভুল বোঝা নায়ক।
সাংবাদিক: আপনি যদি এখন সময় মেশিনে ফিরে যেতে পারতেন, প্রথম কাজ কী করতেন?
মেজর ডালিম: (হেসে) সময় মেশিন দিয়ে ইতিহাসটা পুরোপুরি পাল্টে দিতাম। তবে মেশিনটা হাতে পেলে প্রথমে নিশ্চিত করতাম যে, কেউ আমাকে সময় মেশিন দিয়েও না ধোঁকা দেয়!
সাংবাদিক: আপনি যদি আপনার জীবনের উপর একটি সিনেমা বানাতে চান, তার নাম কী রাখতেন?
মেজর ডালিম: (মৃদু হাসি) “একজন ভুল বোঝা মানুষ”। তবে আমি জানি, সবাই হয়তো সেটা ভেবে দেখবে না।
সাংবাদিক: আপনার কি মনে হয়, আপনি একসময় রাজনীতিবিদ হতে পারতেন?
মেজর ডালিম: (জোরে হেসে) না, আমি রাজনীতিবিদ হতে পারতাম না। আমার ধৈর্য নেই! আর রাজনীতিবিদ হতে হলে মিষ্টি কথা বলতে হয়। আমি সেটা পারি না।
সাংবাদিক: মেজর ডালিম, আপনি কি কখনো ভাবেননি, যদি রাজনীতিতে না যেতেন, তাহলে কী ক্যারিয়ার বেছে নিতেন?
মেজর ডালিম: (হাসি দিয়ে) আমি তো হয়তো কোনো রেস্টুরেন্টে ম্যানেজার হতাম, যেখানে মানুষ এসে রাজনৈতিক বিশ্লেষণ শোনার বদলে মেন্যু থেকে খাবার অর্ডার করত!
সাংবাদিক: আপনি যদি আবার যুবক হতেন, তবে কীভাবে বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেন?
মেজর ডালিম: (হেসে) যদি আবার তরুণ হতাম, হয়তো সেদিন রাতেই কল করতে পারতাম—“অপু, তুমি কী করছি?” আর বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা নিয়ে একটু আলাপ করতাম।
সাংবাদিক: আপনার যদি “অল-টাইম হিরো” নামের একটি টিভি শো তৈরি করতে বলা হতো, তাহলে আপনি কার নাম রাখতেন?
মেজর ডালিম: (মুখটাতে হাসি রেখে) আমি নিজেকে তো রাখতাম না, আমার মতো মানুষ কি হিরো হতে পারে? আমি হয়তো “প্রাচীন ইতিহাসের অজানা হিরো” হিসেবে ক্যাটেগরি করতাম।
সাংবাদিক: ১৫ আগস্ট রাতে আপনি কি মনে করেছিলেন যে, ভবিষ্যতে কেউ আপনাকে “দেশপ্রেমিক” হিসেবে দেখবে?
মেজর ডালিম: (গম্ভীরভাবে) না, সেটা একেবারে চিন্তা করিনি। তবে, যদি কোনো সময় আমাদের গল্প নিয়ে কোনো ছবি বানানো হয়, তবে অন্তত একটা ছোট্ট ক্যামিও রোল আমার থাকার উচিত!
সাংবাদিক: যদি আপনি কোনো সুপারপাওয়ার পেতেন, তবে ১৫ আগস্টে কী পরিবর্তন করতেন?
মেজর ডালিম: (একটু হেসে) আমি সুপারপাওয়ার পেলে, সময়ের স্রোতকে বদলাতে চাইতাম। তবে প্রথমে একটা ডিম ভাজা খেতে চাইতাম, সুপারপাওয়ার নিয়ে তো পরেও ভাবা যাবে।
সাংবাদিক: মেজর ডালিম, আপনি যদি কোনো সুপারহিরো হতে পারতেন, আপনার সুপারপাওয়ার কী হতো?
মেজর ডালিম: (হাসতে হাসতে) আমি হলে “প্রতিটি পরিস্থিতি ঘুরিয়ে দেওয়া” সুপারহিরো হতে চাইতাম। সব কিছু পাল্টে দেওয়ার মতো শক্তি—ভুলকেও সঠিক বানানো।
সাংবাদিক: আপনি যদি একদিন সকালে উঠে দেখতেন, আপনার জীবনের সব ভুল মুছে গেছে, তাহলে প্রথম কাজ কী করতেন?
মেজর ডালিম: (হেসে) প্রথম কাজ হবে, ফোনটা দেখে বুঝতে চেষ্টা করা, এটাই সত্যি না কোনো স্বপ্ন! তবে তারপর কিছু ভালো খাবার খেতাম, ভুল মুছে গেছে, কিন্তু পেট তো খালি থাকতে পারে না!
সাংবাদিক: মেজর ডালিম, আপনি যদি একটা কুকুর হতেন, তাহলে কেমন চরিত্র থাকত আপনার?
মেজর ডালিম: (হাসতে হাসতে) আমি যদি কুকুর হতাম, তাহলে হয়তো “বিপজ্জনক কুকুর” হিসেবে পরিচিত হতো। তবে ঝগড়া না করে একেবারে নীরবে সব কিছু হজম করতাম, কাউকে কিছু বলতাম না!
সাংবাদিক: যদি আপনার একটা বেলুন থাকতো, আর সেই বেলুনটাকে আপনার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা মনে করতেন, সেটা কোনটি হতো?
মেজর ডালিম: (চুপ থেকে) সম্ভবত আমি বেলুনটাকে ধরতাম এবং... পালিয়ে যেতাম! জীবনটা অনেকটাই বেলুনের মতো, কিছুক্ষণ উড়ে যায়, তারপর হঠাৎ গিয়ে মাটিতে পড়ে।
সাংবাদিক: আপনি যদি ডাইনোসর হতে পারতেন, কী করতেন?
মেজর ডালিম: (হেসে) আমি হলে “সবকিছু খেয়ে ফেলা” ডাইনোসর হতাম! রাজনীতি থেকে সব কিছু গিলতে পারতাম, শুধু মানুষ ছাড়া!
সাংবাদিক: যদি আপনাকে বলা হত, আজ রাতেই পৃথিবী শেষ হয়ে যাবে, তাহলে আপনি কী করবেন?
মেজর ডালিম: (চোখ বড় করে) পৃথিবী শেষ হবে? প্রথমে আমি তো কনফার্ম করতাম, টেলিভিশনে সংবাদ দেখব, তারপর আমি সোজা ফ্রিজ খুলে চকলেট আর পিজ্জা খেতে বসব, এটাই সেরা উপায়।
সাংবাদিক: আপনি যদি মুভি চরিত্রে অভিনয় করতে পারতেন, কোন চরিত্রে অভিনয় করতেন?
মেজর ডালিম: (হাস্যকরভাবে) আমি তো “ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস” সিনেমার গাড়ির চাকা! কে না জানে, গাড়ির চাকা সবসময় ঘুরছে, কিন্তু কেউ তাকে সেলিব্রিটি মনে করে না!
সাংবাদিক: আপনার জীবনে যদি কখনো কোনো অদ্ভুত ক্ষমতা আসতো, তবে প্রথমে কী ব্যবহার করতেন?
মেজর ডালিম: (হাসতে হাসতে) যদি কোনো ক্ষমতা পেতাম, তবে আমি শুধু একদিনের জন্য মানুষকে জিজ্ঞেস করতাম, “কী খাওয়ার মন আছে?” তারপর দেখতাম, সবার মাথায় একই খাবারের চিন্তা আছে কিনা!
সাংবাদিক: ১৫ আগস্টের ঘটনার পর, আপনি যদি একটা টিভি শো উপস্থাপন করতেন, তার নাম কী রাখতেন?
মেজর ডালিম: (হাসি দিয়ে) “ভুল ভাঙার কনসার্ট”! সেই শোতে, সবাই আসত, তাদের সব ভুল শোনাতাম, তারপর বলতাম, “ঠিক আছে, এবার লাঞ্চ করুন!”
সাংবাদিক: আপনি যদি পরবর্তী দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে জানতেন, আপনি এখন একজন ফ্যাশন আইকন, তাহলে কী করতেন?
মেজর ডালিম: (বড়সড় হাসি) ফ্যাশন আইকন? প্রথমে আমি তো আয়নায় তাকাতাম, বুঝতাম না এটা কি বুদ্ধি না ফ্যাশন! তারপর একটা বড় শাল কিনে পুরো শহরে ঘুরে বেড়াতাম!