তাসলিমা নাসরিনের বইয়ে ঈমান দণ্ড খুলে পরল তৌহিদি জনতার

“কিসের কবিতা? কবিতা ইসলামে জায়েজ নয়। তাসলিমার কবিতার বই আমাদের ঈমান দণ্ড আহত করেছে৷

ঈমান দণ্ড খসে পরার পর তৌহিদি জনতা

ঢাকা গদিবেদক. গদি মিডিয়া ইন 

সম্প্রতি তৌহিদি জনতা সদ্য সনাতন ধর্ম গ্রহণ করা “স্বঘোষিত” নাছতিক, এপার বাংলা - ওপার বাংলার সম্মিলিত জাতীয় কবি, কবিতার গন্ডার খেত  তাসলিমা নাসরিন ওরফে মনুশ্রী পুটকির কবিতার বই রাখায় ঈমান দণ্ড খুলে পরল এক তৌহিদি জনতার। এমন অভিযোগে ‘সব্যসাচী প্রকাশনীর’ স্টলে আত্মঘাতী বুমা হামলা করে স্টলটি উড়িয়ে দেয় একদল তৌহিদি জনতা। 

নাম না জানানোর সূত্রে ঐ তৌহিদি জনতা হুহু করে কাঁদতে কাঁদতে গদি মিডিয়াকে জানান, “আজ সন্ধ্যায় আমি সব্যসাচীর স্টলের সামনে থেকে যাচ্ছিলাম। অমনি একখানা চটি কবিতার বই আমার চুখে পরলে তাকিয়ে দেখি আমার ঈমান দণ্ড মাটিতে লুটোপুটি খাচ্ছে! এই বইয়ের এত ধাঁড়! সুতরাং কাছে গিয়ে দেখতেই হলো৷ গিয়ে দেখি একাধিক বেনানা খেকো বাংলাদেশ হতে বিতাড়িত তাসলিমা নাসরিনের কবিতার বই!” 

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৎক্ষনাৎ এক রাউন্ড বাইরাবাইরে হবার পরে তৎক্ষনাৎ পকেট হইতে বুমা বের করেন ঐ তৌহিদি জনতা এবং স্টলে নিক্ষেপ করলে বিস্ফোরণ ঘটে৷ 

মনুশ্রী পুটকি
চিত্র: মনুশ্রী পুটকি 

এ ঘটনায় হতাহতের খবর না পাওয়া গেলেও একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে মনুৃশ্রী পুটকি লিখেছেন, “বাংলাদেশের আকাশে আজ দূর্যোগের ঘনঘটা। কেউ কবিতা বুঝেনা। যে দেশ কবিতা বুঝেনা তার ভবিষ্যৎ নিয়া আমরা শঙ্কিত।  আমরা শেখ হাছিনার সেকুলার শাসনামল ছেড়ে এ কুন আফগানি শাসনামলে পতিত হলেম? বাংলাদেশের এখন অলটারনেটিভ নাম ‘ইসলামি প্রজাতন্ত্র বাংলাদেশ’। কুথাও শান্তি নাই৷ বিদেশের মাটিতে আমার তেমন কুনো কামাই নাই৷ দুটো বই বেচিয়া পয়সা রুজগার করিব তাহারও পথ নাই৷ আমি আজ বড় অসহায়। আগে বিভিন্ন দেশ দিয়া মুল্লা মৌলভীদের নামে বদনাম করে দুটো পয়সা আসিতো এখন উহারও পথ বন্ধ। শেষ অবলম্বন হিসেবে ছিলো বই লেখা। আমার বইয়ে কি নেই? প্রেম আছে, কিস আছে, হাগ আছে, সোংসার আছে, নায়ক আছে, নায়িকা আছে কেবল কুনো মোল্লার কেরেক্টার নাই৷ দোষ কি তাইলে সেইটাই?”

নাকের পানি মুছতে মুছতে ঘোঁৎঘোঁৎ করে কাঁদতে কাঁদতে নির্বাসিত এই মহিলা গন্ডার বলেন, “এতবার অভিনয় করিয়াও কুনো চান্সেই আলোচনায় উঠিতে পারিনাই৷ আমি পঙ্গু হইয়াছি, মরিয়া গিয়াছি ইত্যাদি কত কন্ট্রোভার্সি সামনে লইয়া আইলাম মাগার কুনো মার্কেট পেলুম না। এইবার কন্ট্রোভার্সি নিজে হাঁটিয়া আমার কাছে আসিলো৷ এইবার ইহাকে জায়গা মতো কাজে লাগাইব৷ বাংলাদেশ না বেচিয়া আমি খাইব কেমনে?”

 মনুশ্রী পুটকি ওরফে তাসলিমার বই রাখায় স্টল ভাঙা হোলো কেন এমন প্রশ্নে  তৌহিদি জনতার মুখপাত্র বলেন, “কিসের কবিতা? কবিতা ইসলামে জায়েজ নয়। তাসলিমার কবিতার বই আমাদের ঈমান দণ্ড আহত করেছে৷ এই বইয়ে ইউনিভার্সের সেরা রিলিজিয়ন ইসলামের নামে আকথা-কুকথা রহিয়াছে৷ কবিতায় সে ইসলাম নিয়ে বাজে কথা বলেছে। মামুনুল হকের নামে কুটকথা রহিয়াছে৷ আমি যদিও বইটি পড়িনি তবে ধারণা করছি এটির মধ্যে অনেক এডাল্ট গল্পও থাকিতে পারে। স্বাধীন বাংলায় কুনো ইহুদি নাছারাদের গুলামের বই থাকিবে না। আমাদের বইমেলা জুড়িয়া কেবল থাকবে ইছলামিক বই৷ হায়েজ নেফাছ ও বারো চান্দের খুৎবার বই৷ একুশে বইমেলার নাম আমরা পরিবর্তন করিয়া রাখিবো ‘ইসলামিক বইমেলা’। এখানের কুনো স্টলে বিজ্ঞানের বই থাকিবে না৷ বিজ্ঞান আবার কিসে দরকার?  বিজ্ঞানীরা কুরান হইতে সকল চুরি করিয়া বিজ্ঞান লেখে৷”

ঈমান দণ্ড উঁচু করিয়া তিনি আরো বলেন, “আমদের ঈমান দণ্ড খুবই সেনসেটিভ। এই দণ্ডে সামান্য কিছু লাগিলেই ছ্যাৎ করিয়া ওঠে। আমাদের সহিত খেলা করিতে আসিও না আমরা নিজেরাই একেকজন রেফারি। বই মেলায় কুনো নাস্তিক - মুরতাদ বিধর্মীর স্থান থাকিবে না। বাংলাদেশ আমরা নাস্তিক মুরতাদ মুক্ত করিব। কয়েকদিন পরেই পতপত করিয়া খেলাফতের কালো পতাকাকে জাতীয় পতাকা হিসেবে স্বীকৃত দিবো। বাংলাদেশ হবে একটি খেলাফতি রাষ্ট্র। আর খিলাফতি রাষ্ট্রে কবিতা গান জায়েজ নয়। ন মোর নাস্তিক মুরতাদ, অনলি মামুনুল হক ইজ রিয়েল। ”

নবীনতর পূর্বতন