তিতুমীর কে পৃথিবীর সেরা কলেজ হিসেবে স্বীকৃতি ‘টিএইচই’ এর

হু হু করে কাঁদতে কাঁদতে ঐ ছাত্র গদি মিডিয়াকে জানান, “গার্লফ্রেন্ডকে মুখ দেখাইতে পারিনা। গার্লফ্রেন্ড সবসময় তার কাজিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বলিয়া খোটা দেয় অথচ আমি তো আর বলতে পারি না আমার দৌড় কুন পর্যন্ত।”

তিতুমীর কলেজ
চিত্র: বিশ্বের সবচেয়ে সেরা কলেজ তিতুমীর কলেজ৷ 

কেম্পাস গদিনিধি. গদি মিডিয়া ইন 

সারা বাংলাদেশ যখন যখন তিতুমীর কে চিনল না তখনই কাটা ঘাঁয়ে নুনের ছিটা হিসেবে এলো ‘টিএইচই’ (Times Higher Education) এর এই ঘোষণা৷ পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা বিদ্যালয় হিসেবে র‍্যাংকিয়ের শীর্ষে নাম উঠে এসেছে বাংলাদেশের অনন এন্ড অনলি, কলেজের চেয়েও বেশিকিছু, গ্রামের চাচাত ভাইদের আবেগ বাংলাদেশের একমাত্র সনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ‘সরকারি তিতুমীর কলেজ’ এর নাম। 

‘টিএইচই’ (Times Higher Education)
‘টিএইচই’ (Times Higher Education)

এ বিষয়ে তিতুমীর কলেজের প্রিন্সিপাল ফেরদৌস আরা বেগমের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি মইলা মানুষ, বাচ্চাকাচ্চা আমাকে পাত্তা দিতে চায় না৷ তারা পড়ার চেয়ে বেশি আন্দুলন ভালবাসে৷ তাই দুইদিন পরপর কেবল বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবী নহে, নিশ্চয়ই খেয়াল করিয়া দেখিয়াছেন কলেজের সামনে একখানা ফিলাইউবার, সেই ফিলাইউবারে রাত্রিরে টুকাইরা পায়খানা করে — কেন টুকাইরা রাত্রে পাইখানা করে দিনে করে না তা নিয়াও বছরে কয়েকদিন আন্দুলন বসেন তারা৷ তাদের সব আন্দুলন আমি গ্রাহ্য করিনা বাট উহাদের ‘বিশ্ববিদ্যালয় করণ’ দাবীখানা আমি সমর্থন না করিয়াও পারি না৷ বিশ্ববিদ্যালয় হইলে আমারই লাভ৷ আমার কুতাও লছ নাই। একখানা ভিসি ভিসি ভাবে থাকা যাবে৷ বিতন বাড়িবে সুযগসুবিধেও বাড়িবে আমার৷ সর্বোপরি ভাবও বাড়িবে৷ ভাবের উপরে কুনো অষুদ নাই৷ ’

আরও দেখুন:

তিতুমীর কলেজ কে ‘বিশ্ববিদ্যালয়’ ঘোষণা

না পড়িয়াও এতদূর এগিয়ে যাওয়ায় তিতুমীর কলেজের ছেলেদের ব্রেইনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, 

  “আওয়ামিলীগের আমলে আমাদের ছেলেরা পারেনাই। ফেছিবাদী হাছিনা কথায় কথায় ডান্ডা মারিত। কম তো মাইর খেলনা৷ আর কত? এই সরকারকে ধরেছি৷ ল্যাবেন্ডিস সরকারের পালাইবার কুনো পথ নাই৷ আমার ছেলেরা মেদা-বি৷   সারাদিন আন্দুলন, আন্দুলন করিয়া বাপের পুটু ছিড়িয়া পড়ার নাম করিয়া এক টাকার জায়গায় বিশ টাকা আনিয়া মেসে বসে গাঁঞ্জা টানিয়াও যে এত ভালো অবস্থানে নিজের প্রতিষ্ঠানকে নেয়া যায় তাহা আমার কলেজের ছাত্রদের কাছ থেকে পৃথিবী বাসীর শেখা উচিৎ। উহাদের যদি প্রতি সপ্তাহে আন্দুলন কার্যক্রম না থাকিত তাহলে সামাইন্য পড়ে দ্যা বেস্ট ইউনিভার্সিটি অব মিল্কিওয়ে গেলাক্সি সম্মাননা পাইত । আমি টিএইচই কে ধন্যবাদ জানাই, সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া হইল।”

নিজের কলেজ এখন পৃথিবী সেরা কলেজ কিভাবে হইলো, আর বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবীই বা কেন? এ বিষয়ে এক তিতুমীরিয়ান আন্দুলন কারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি আর আবেগ ধরে রাখতে পারেননি৷ 

হু হু করে কাঁদতে কাঁদতে ঐ ছাত্র গদি মিডিয়াকে জানান, “তিতুমীর পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কলেজ হইল উহাও আমাদের আন্দুলনের ফসল। গার্লফ্রেন্ডকে মুখ দেখাইতে পারিনা। সে নিজেও ইডেন ইউনিভারসিটির ছাত্রী। গার্লফ্রেন্ড সবসময় তার কাজিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বলিয়া খোটা দেয় অথচ আমি তো আর বলতে পারি না আমার দৌড় কুন পর্যন্ত।”

নাকের সর্দি মুছতে মুছতে ঐ শিক্ষার্থী পুনরায় বলেন,“কুনো সরকার আমাদের দুঃখ বুঝিল না৷ সরকারের শরীরে প্রেম নাই উনারা গার্লফ্রেন্ডের খোটার কি বুঝিবে? অথচ আন্তর্জাতিক সংস্থা বুঝিলো৷ রাস্তায় নামলে মানুষ আমাদের ‘বেহুদা গেঞ্জাম করা কুরুমচোদ’ ডাকে তাহাও সইহ্য করিয়া এই আন্দুলনে পরিয়া আছি। বরিশালের ঐ গাও গিরামে ভাঁড়সিটি হইতে পারলে আমরা কুন দোষ করেছি। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় না হওয়া অব্দি শান্তি নাই৷ যদিও এই ভেবে শান্তি পাচ্ছি যাক অবশেষে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান আমাদের স্বীকৃত দিলো। তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় চাই নাহয় কাল মহাখালী অচল করিয়া দেবো৷  ”চোখের পানি মুছতে মুছতে ঐ কুরুমচোদ বলেন, “সাত কলেজের সহিত আমরা আর নাই৷ আমরা সতন্ত্র মহা বিদ্যালয় চাই৷ ভাগেযুগে ভেজাল বেশি৷ গার্লফ্রেন্ডকে বুক ফুলাইয়া আমিও বলতে চাই আই রিড ইন তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়”

আন্দুলনে পথ শিশুরা

নাম না জানানোর সূত্রে তিতুমীর কলেজের এক ছাত্র বলেন, “আমাদের ক্লাস হয় না বলে মন খারাপ ছিল। এখন বুঝলাম, এটা ‘টপ সিক্রেট’ টেকনিক। সেরা হতে গেলে এভাবেই ক্লাস এভয়েড করে আন্দুলন করতে হয়। গর্বিত যে, বাপের পোঙ্গা মারিয়া এখনো ভার্সিটি বলে চালিয়ে দিচ্ছি। অথচ ঢাকায় আসিয়া কুথাও চান্স না পাইয়া আমি যে তিতুমীরে ভর্তি হয়েছি তা বললে আমাকে বাপ তেজ্য করিবে৷ ”

এদিকে কোনকোন মানদণ্ডতে তিতুমীর পৃথিবীর সর্বসেরা কলেজের স্বীকৃত পেল সে তথ্য প্রকাশ করেছে টিএইচই।

একটি বিবৃতিতে ঐ প্রতিষ্ঠানটি কারণগুলো বলেন, “

  • তিতুমীরে রয়েছো  ইকো-ফ্রেন্ডলি ক্যাম্পাস।বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণের বিশালাকার গাছ, রাস্তার পাশের চায়ের দোকান, আর সামনের গলির চায়ের কাপে জীবনের ক্লাসগুলো এমনভাবেই চলে, যা কোনো বিলাসবহুল ক্যাম্পাস দিতে পারে না।
  • তিতুমীরের ছাত্ররা শুধুমাত্র গুলশান, বনানী বা নিকটবর্তী চায়ের দোকানে নয়, বাসের টিকেট কিনতে গিয়ে গাবতলী বা কমলাপুর পর্যন্ত নিজেদের বৈশ্বিক উপস্থিতি ছড়িয়ে দেয়।
  • ক্লাসে ১০০ জন ছাত্র থাকলেও স্যার মাত্র ১ মিনিটে হাজিরা শেষ করে ৯৯ জনকে নতুন করে স্বপ্ন দেখার সুযোগ দেন—ক্লাস শুরু হওয়ার আগেই।
  • ক্লাস না হলেও কীভাবে নিজেকে শিক্ষিত করতে হয়, তা এখানকার ছাত্রদের ওপর একটি অনানুষ্ঠানিক পরীক্ষার মতো চলে।
  • তিতুমীরে রয়েছে পড়াশোনার চাপমুক্ত পরিবেশ। কলেজটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য—ক্লাস না হলেও ছাত্ররা সেশন জটের মাধ্যমে মানসিক চাপের সঠিক ব্যবস্থাপনা শিখে। "লেট দেয়ার বি লার্নিং বাই প্যাশেন্স"—এটাই এখানকার মূলমন্ত্র।
  • লাইব্রেরি ছাড়াই ছাত্ররা কীভাবে পিডিএফ, ফটোকপি এবং সিনিয়রদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা নোট দিয়ে গ্র্যাজুয়েট হয়ে যায়—এটা বিশ্বজুড়ে এক গবেষণার বিষয় হয়ে উঠেছে।

এদিকে এই ঘোষণার পর বিশ্বজুড়ে শুরু হইয়াছে হৈচৈ। হার্ভার্ড, অক্সফোর্ড, এবং এমআইটির মতো প্রতিষ্ঠান তাদের ছাত্রদের তিতুমীরের লাইনে দাঁড়ানোর প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য বিশেষ কোর্স চালু করার চিন্তা করছে। 

বাইরের দেশগুলো এখন তাদের শিক্ষা কারিকুলারে ‘তিতুমীর মডেল’ প্রয়োগের জন্য গবেষণা শুরু করেছে। বিদেশ থেকে তিতুমীরে ভর্তির জন্য লাখলাখ এপ্লিকেশন ইতোমধ্যেই জমা পরেছে বলে জানান ঐ কলেজেরই এক প্রফেসর৷

তিতুমীর কলেজের এই অর্জন শুধু প্রতিষ্ঠানটির নয়, পুরো বাংলাদেশের। এখন শুধু প্রয়োজন তিতুমীর কলেজকে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া, যাতে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমরা বলতে পারি, “তিতুমীর ইজ দ্যা বেস্ট!”

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

নবীনতর পূর্বতন