গীতার প্রভাবে জীবনের গভীর অর্থ খুঁজে পেয়ে, তিনি গ্রহণ করেছেন হিন্দুধর্ম। জানুন তার সিদ্ধান্তের পেছনের গল্প, বিশ্বাসের পরিবর্তন, আর সমাজের প্রতিক্রিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে ডা. কামরুল. গদি মিডিয়া ইন
দেশের আলোচিত সাংবাদিক, সাংবাদিকতার ব্লুটুথ বয়, অসাম্প্রদায়িক চিন্তার মেড ম্যাক্স ইলিয়াস হোসেন সম্প্রতি হিন্দুধর্ম গ্রহণ করেছেন বলে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, তিনি ভগবদ্গীতা পড়ে গভীর অনুপ্রেরণা পেয়েছেন এবং ধর্মীয় দিক থেকে নিজের পথ পরিবর্তন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
সনাতন ধর্ম গ্রহণ করে সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার নাম রেখেছেন —‘ইন্দ্রলোচন শর্মা’, খবর রয়টার্সের।
‘গরুর মাংস খেলে এলার্জি হয়’ মন্তব্যে করে ইলিয়াস বলেন, আমি লক্ষ্য করিয়াছি গোমাংস ভক্ষণ কালে আমার এলার্জি হয়। তাহলে বুঝতেই পারছেন, সনাতনে কেন গোমাংস ভক্ষণ নিষিদ্ধ? সনাতন যদি সত্য না হইত তবে কি আমার এলার্জি হইত?, মূলত ভগবান এলার্জি দিয়ে বুঝাতে চান — আমরা যেন গোমাংস ভক্ষণ না করি। ”
তার কথায়, গীতায় বর্ণিত আত্মার অমরত্ব, কর্মফল, এবং জীবনের চূড়ান্ত লক্ষ্য তাকে গভীরভাবে স্পর্শ করেছে। এবং এই লক্ষ্য পূরণে তিনি নিউইয়র্কে যেখানে থাকছেন, সেখানে একটি মন্দির গড়ে তুলবেন বলে জানা যায়।
ইলিয়াস হোসেন সম্প্রতি ভারতের বারাণসী সফর করেন, যেখানে তিনি একটি মন্দিরে হিন্দু ধর্মে আনুষ্ঠানিক দীক্ষা গ্রহণ করেন। তার দীক্ষা অনুষ্ঠানে উপস্থিত পুরোহিত জানিয়েছেন, “তিনি অত্যন্ত আন্তরিক এবং ধর্মীয় বিষয়গুলো নিয়ে গভীর আগ্রহী। ইলিয়াসের মতো ছেলে বাংলাদেশে খুবই কম। এত পরমতসহিষ্ণু ছেলে পৃথিবীতে সত্যিই বিরল!”
এদিকে ইলিয়াস হোসেনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে তার টিনেজ ক্বওমী ভক্তদের মাঝে। অনেকেই তার ব্যক্তিগত পছন্দকে সম্মান জানালেও, কেউ কেউ এটি নিয়ে বিতর্ক শুরু করেছেন।
একটি ওয়াজ মেহফিলে মামুনুুল হক বলেন, ‘ইলিয়াস হোসেনকে কতল করা ওয়াজেব। সে মুর্তাদ হইয়া গিয়াছে৷ তাহাকে কল্লার ওপর কোপ মারিয়া কতল করিতে হইবে৷ ’
প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ক্বওমীর আরেকটি শাখা বাঁশপীর, ছায়াপীর, পৃথিবীর একমাত্র সহীহ শুদ্ধ পীর চর্মনাইয়ের পীরে মোজাদ্দেদ, মাওলানা ভয়জুল করীম। একটি রিয়ালিটি শো-তে বক্তব্য কালে ভয়জুল বলেন, ‘নিঃসন্দেহে ইলিয়াস হুচেন মোনাফেক অইয়া গ্যাছে মনু বোজ্জো? ইলিয়াস হোসেনরে যেইহানে পাবা হেইহানে কতল কইররা হালাবা মনুরা বোজ্জো? ও বাবা........ এই ইলিয়াস আগেই তো ভালো আছেলে পরে নষ্ট অইয়া গ্যালে... মনু বোজ্জো?”
এদিকে সোশ্যাল মিডিয়ায় ইলিয়াসকে দুচখের পাতায় একটুও দেখতে পারে না এমন সমালোচকরা এটিকে "জল ঘোলা করার বেহুদা চেষ্টা" বলে অভিহিত করেছেন।
অন্যদিকে, হিন্দু সম্প্রদায়ের অনেকে এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “গীতার শিক্ষা যে কাউকে বদলে দিতে পারে, এটি তার প্রমাণ।”
ইলিয়াস হোসেন তার নতুন ধর্মীয় জীবনের যাত্রা শুরু করেছেন এবং নিজেকে মানবতার সেবায় নিবেদিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, “আমার ধর্ম যা-ই হোক না কেন, আমি সবসময় সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করব।”
ইলিয়াস হোসেনের এই ধর্মান্তর দেশের ধর্মীয় ও সামাজিক অঙ্গনে নতুন আলোচনা তৈরি করেছে। তবে এটি তার ব্যক্তিগত বিশ্বাস এবং জীবনের গভীর উপলব্ধির প্রতিফলন বলে মনে করছেন তার ঘনিষ্ঠরা। সময়ই বলে দেবে, এই সিদ্ধান্ত তার জীবনে কতটা প্রভাব ফেলবে।